অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে আসে ছাত্রদের জীবন
বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় যত ছাত্র পড়তে আসে এদেশের নিয়মকানুন মেনে ব্যাংকে অভিভাবককে ধনাঢ্য ব্যক্তি দেখালেও সিংহভাগ ছাত্র মূলত এক সেমিস্টারের টাকা জমা দিয়ে আসে। আমি যাদের সংস্পর্শে আসি তাদের উদ্ধুদ্ধ করি যাতে দ্বিতীয় সেমিস্টারের টাকা সে কাজ করে দেয়। এবং বেশিরভাগ ছাত্র তা পারেও। এতে করে এদেরকে একাধিক কাজ করতে হয়। পড়াশুনা ঠিক রেখে কাজ নয় কাজ ঠিক রেখে করতে হয় পড়াশুনা। জীবন যেখানে যেমন।
নতুন আসা ছাত্রদের সংগে আড্ডা দিয়ে, গাড়িতে নিয়ে ঘুরে আরেকটা কাজে উদ্ধুদ্ধ করতে হয়। দেশে থাকতে পারিপার্সিক নানা কারনে একেকজন ছিল অজুহাত মাস্টার! এই নাই সেই নাই, ঘুম থেকে উঠতে পারিনি, মনে ছিলোনা ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে তাদের বুঝাই ভাইরে এটা কাজের দেশ। কাজ ষোল আনা আদায় করে নেয়। কোথাও কোন অজুহাত চলে না।
কাজে এখানে সবাই সময় ধরে দ্রুত চলে। কোন কারনে যদি কাজে পৌঁছতে কিছু দেরি হতে পারে মনে হয় তাহলে পথ থেকে ফোনে জানাতে হয়। তারা বিষয়টি একোমডেট করে নেবে। আর ফোন করে না জানালে অনির্ভরযোগ্য মনে করে আর হয়তো তেমন শিফটই দেবেনা। আর সারাক্ষন হাসিমুখ, পজিটিভ থাকতে হবে। কোথাও মিথ্যা বলা যাবেনা।
এই যে এত ছাত্রের কাজের কথা লিখি এর বেশিরভাগ মূলত কিচেনহ্যানড বা ক্লিনিং জব। অনভ্যস্ত এসব কাজ করতে গিয়ে প্রথম প্রথম অনেকে ব্রেকের সময় টয়লেটে বসে কাঁদে। অনেকের হাত পুড়ে। কিন্তু তা বাবা-মাকে বলেনা। কিন্তু পরে মানিয়ে নেয়। কারন কাজ তার দরকার। নিজের থাকতে চলতে সপ্তাহে ৪-৫ শ ডলার খরচ হয়। এরপর আবার টিউশন ফীর চিন্তা। পাশাপাশি ঠিক রাখতে হয় ক্লাস পড়াশুনা। কারন এসব ঠিক না থাকলে ছাত্রত্ব এবং ভিসা বাতিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ টাকা বেতন বাড়ালে যে ছাত্র বাসে আগুন দিয়েছে সে ছাত্র এখানে এসে এমন বদলে যায়! কারন সে জানে এটা কোন অজুহাতের দেশ নয়। এমন আগুন দিতে পেলেতো তাকে সোজা দেশে পাঠিয়ে দেবে।
আজ ছাত্রদের কাজ করে পড়াশুনা নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। কাজ পাওয়া যায়না সহ নানা অজুহাত সেখানে! আরে বাবা এদেশেওতো ছাত্রদের কাজ মানুষ হাতে নিয়ে ঘোরেনা। কারন একজন ছাত্র আইনানুগ সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারে। সে কারনে অনেকে ছাত্রদের এবোয়েড করে ফুলটাইম কাজের পারমিশন আছে এমন লোক খোঁজে। এ পরিস্থিতির ভিতর কাজ খুঁজে নিতে হয়। এবং নিজস্ব দক্ষতা প্রমান করে ধরে রাখতে সে কাজ। আরেকটি বিষয় কারো এখানে কাজ বাছাই করার সুযোগ নেই। যা পায় সেটা করে। এদেশে বাবু নেই। সবাই সব কাজ করে। বাংলাদেশের ছাত্ররাও করে। কারন এখানে কোন আব্বু নেই। সপ্তাহ শেষে অতগুলো টাকা আব্বু দেবেনা বা আব্বুর অত সামর্থ নেই।
আরেকটা বিষয় এসব দেশে মাথায় রাখে সবাই। তাহলো সামর্থ। এখানে সবাই যার যার সামর্থ অনুসারে চলে। আপনার সামর্থ নেই কিন্তু আপনি যে অত টাকার টিউশন ন ফীর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন! কেউ কী বলেছে অত টাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি না পড়লে দেশটা অন্ধকার হয়ে যাবে! আপনি যে অমুক অমুক সাবজেক্টে পড়ছেন, এই পড়াশুনার জব মার্কেট আছে কী বাংলাদেশ? যে যে সাবজেক্টের জব মার্কেট এখানে নেই তা এখানে কেউ পড়েনা। তাই এখানে জব মার্কেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবজেক্ট ঠিক করে। বিবিএ এমবিএ এসব দেশে গন্ডায় গন্ডায় কেউ পড়ে না। এসব এদেশের অভিবাসন দক্ষতার তালিকায়ও নেই। এসব স্নাতকের এরা ওভার কোয়াইফাইড মনে করে এরা কাজ দিতে চায় না। সে কারনে কেউ বিবিএ এমবিএ পড়তে এলে আমি তাদের পটিয়ে ছয় মাস পর তাকে এমন একটা সাবজেক্টে বদলি করে নিয়ে যাই যে পড়াশুনার এখানে ভবিষ্যত আছে।
Related Articles
India-Israel close relationship may likely to be stronger
Israel’s relationship with India under the Modi government is likely to be stronger because of two reasons. First it is
NAIDOC Week
নেইডক সপ্তাহঅস্ট্রেলিয়াকে বলা হয় অভিবাসীদের বাসভূমি বা ল্যান্ড অব মাল্টিকালচারাল সোসাইটি। যদিও ১৬০৬ সালে ডাচ ক্যাপ্টেন উইলিয়াম ইয়্যানজ এবং ১৬৯৭
নুসরাত নুসরাত
ফজলুল বারী: দেশজুড়ে চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যার বিচার নিম্ন আদালতে শেষ হয়েছে অবিশ্বাস্য কম সময়ে। বিচারের রায় ঘোষনার পর আসামি পক্ষ